শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২২ অপরাহ্ন
সিরাজ প্রামাণিকঃ এবার খোদ কুষ্টিয়ার কুমারখালীর চাঁপড়া ইউনিয়নের লাহিনীপাড়া ৪ নং ওয়ার্ড মেম্বর শহিদুল আলম খান এর বিরুদ্ধে করোনাকালে উফশী আউষ চাষে সরকারী প্রণোদনার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। মম্বর সচ্ছল কৃষক হওয়া সত্ত্বেও নিজের নামেই এ প্রণোদনা গ্রহন করেছেন। সেই সাথে তার তার আপন ভাতিজা আরাফাত আলী খান ও তার নিকটাত্মীয় ইট ভাটার মালিক মোঃ মমিনুল ইসলাম বকুলকেও প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র চাষী হিসাবে উফশী আউষ চাষে প্রণোদনা প্রদান করেছে। এ নিয়ে এলাকায় প্রকৃত প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র চাষীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
সরকারী সার্কুলার অনুযায়ী, যাদের ৫ শতক থেকে ৪৯ শতক পর্যন্ত জমি রয়েছে কেবলমাত্র তারাই প্রান্তিক চাষী হিসেবে বিবেচিত হবেন এবং ৫০ শতক থেকে আড়াই একর জমির মালিক ক্ষুদ্র চাষীর আওতাভুক্ত হবেন। কিন্তু উল্লেখিত ওয়ার্ড মেম্বার, তার ভাতিজা ও ভাটার মালিক অনেক সম্পত্তির মালিক হওয়া সত্ত্বেও প্রকৃত কৃষকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে নিজেদের মধ্যে প্রণোদনার টাকা ভাগ করে নিয়েছে।
কৃষি বিভাগের দেবাশীষ দাস জানান, প্রণোদনা প্রস্তুতকরনের জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে কমিটি গঠনে পদাধিকার বলে সভাপতি থাকেন ইউপি চেয়ারম্যান এবং মেম্বার ও মহিলা মেম্বার সদস্য হিসেবে থাকেন। উপসহকারী কৃষি অফিসারের মধ্যে যিনি সিনিয়র তিনি থাকেন সদস্য সচিব হিসেবে। এখানে যেহেতু চেয়ারম্যান সভাপতি তার স্বাক্ষরিত তালিকা অনুযায়ী প্রণোদনা দেয়া হয়ে থাকে। ত্রুটি যদি থাকে সেটা চেয়ারম্যানের মাধ্যমে হবে। কারন তিনি যাচাই বাছাই করেই তালিকা প্রস্তুত করে জমা দেন। মেম্বার, তার ভাতিজা ও ভাটার মালিক এ প্রণোদনা পাবার যোগ্য কি-না জিজ্ঞেস করলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজী হন না।
৪ নং ওয়ার্ড মেম্বার শহিদুল আলম খান প্রান্তিক চাষী হিসাবে প্রণোদনা গ্রহণ বিষয়ে তিনি জানান যে কৃষক হিসেবে প্রনোদনা নিয়েছেন। প্রান্তিক কৃষকের আওতায় তিনি পড়েন কি-না জিজ্ঞেস করলে তিনি কোন সদুত্তর দেননি। তার ভাতিজা আরাফাত আলী খান একজন ছাত্র সে কিভাবে কৃষক প্রণোদনা পায় এ বিষয়ে মেম্বর জানান, আমার ভাইয়ের আইডি কার্ডে নাম ভূল আছে তাই ভাতিজার নামে প্রণোদনা দিয়েছি। মমিনুল ইসলাম বকুল একজন ভাটার মালিক হয়ে কিভাবে প্রণোদনা ভোগী হয়েছেন বিষয়ে চেয়ারম্যান সাহেব জানেন বলে জানান।
এ বিষয়ে চাপড়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মনির হোসেন রিন্টু জানান, বিভিন্ন গ্রাম থেকে ইউনিয়ন পরিষদ, এমপি এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের প্রতিনিধিদের পাঠানো নাম থেকে তালিকা তৈরী করা হয়। এক্ষেত্রে সুবিধাভোগী বাছাইয়ে কোন ভুল বা অনিয়ম হয়েছে কি-না যাচাই করে দেখতে হবে।
এদিকে এ মেম্বরের বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দের চাল আনতে গিয়ে মেম্বার ও তার ভাই পল্টু মিয়ার কাছে লাঞ্ছিত হয়েছেন হতদরিদ্র দর্জি। এ বিষয়ে লাহিনীপাাড়া গ্রামের লাঞ্চিত দর্জি মোফাজ্জেল খাঁ (৪৫) ওরফে মুফা জানান, মহামারী করোনা পরিস্থিতে পরিবারের সন্তানদের নিয়ে খাদ্য সংকটে পড়ে এ মেম্বরের বাড়ীতে চাল আনতে যাওয়া তিনি ও তার ভাই পল্টু খান আমাকে মারধর করে তার বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। এছাড়া এ মেম্বরের বিরুদ্ধে নি¤œমানের ইট দিয়ে স্থানীয় একটি রাস্তা তৈরীর অভিযোগ রয়েছে।